২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে সরকার। সরকারের জারিকৃত এই পরিপত্রের আলোকেই নিয়োগ হয়ে আসছে।
সম্প্রতি সরকারের উক্ত পরিপত্রের বিরুদ্ধে রিট হলে হাইকোর্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের পক্ষে রায় প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান ছিল কোটা বাতিলের পক্ষে এবং অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন কোটা বাতিলের পক্ষে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন। কিন্তু আদালতের একটি রিটের রায়কে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের রাজপথে নামানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে কারা!
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সকলে যখন সোচ্চার এবং সরকারের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজদের ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, ঠিক তখনই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে কোটাবিরোধী আন্দোলন। সরকারের কট্টর সমালোচকরাও এই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষত কোটা সংশ্লিষ্ট রায় যেহেতু আদালতের, তাই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এর সুরাহা হওয়া বাঞ্চনীয়।
১০ জুলাই কোটা বহাল করে হাইকোর্টের প্রদত্ত রায় স্থগিত করা হয়েছে। অর্থাৎ মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ হবে। কিন্তু তারপরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় প্রমাণ হয়েছে যে, কোনো অশুভ উদ্দেশ্যে টাকার বিনিময়ে পরিচালিত হচ্ছে এই আন্দোলন।
কোটা বাতিলে সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থানের পরও রাজপথে অবস্থান নিয়ে ভোগান্তি সৃষ্টির কী কারণ হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কয়েকটি অনুসন্ধানের সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, দুর্নীতির ইস্যু আড়াল করতে কয়েকজন দুর্নীতিবাজ এই আন্দোলনে কালো টাকা ঢালছে। এছাড়া বিএনপি-জামাতের পক্ষ থেকেও এ আন্দোলনে টাকা ঢালা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় সানজানা আফিফা অদিতির সঙ্গে মতিউর-কন্যা ফারজানা রহমান ইপ্সিতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আফিফা ও অপর আন্দোলনকারী সারজিস আলমের মাধ্যমে এ আন্দোলনে কালো টাকা ঢেলেছে মতিউর। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর নামে বেনজীরসহ কয়েকজন দুর্নীতিবাজের কাছ থেকে প্রাপ্ত অবৈধ অর্থের সমন্বয় করছে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ও আখতারের গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব নাহিদ ইসলাম। এছাড়া সরকার পতনের যে রহস্যজনক ঘোষণা বিএনপি দিয়েছে তার সঙ্গেও এর যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিমত, অযৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে কেউ যেন অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা না করে। সচেতন নাগরিকরা মনে করেন আদালতের রায় আদালতের মাধ্যমেই সমাধান করা উচিত। বিশেষত সরকার যেহেতু কোটা বাতিলের পক্ষে, তাই এই ইস্যুতে আন্দোলন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার অপচেষ্টা রুখে দেওয়া উচিত।
কোটা আন্দোলনের নামে যারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন সচেতন নাগরিকগণ।