ঢাকায় গণপরিবহনে এক হিজাবী নারী কর্তৃক টি-শার্ট পরা এক ছাত্রীকে হেনস্থা এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করার একটি ভিডিও আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই সেই হিজাবী নারীকে পর্দানশীন ও ইসলামী চেতনায় বিশ্বাসী বলে মনে করে সাধুবাদ জানিয়েছেন মন্তব্যের ঘরে। ঘরে ঘরে এমন নারীই দরকার বলে মন্তব্য করেন কেউ কেউ।
তবে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ এই নারীর এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণকে ইসলামের নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না বলে মন্তব্য করেন। বিশেষ করে ওই ভিডিওতে ওই হিজাবী নারীর পোশাক নিয়েও কটাক্ষ করেন অনেকেই। জামার ভেতরে থাকা উর্ধ্ব-অন্তর্বাস স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল তার, এমনকি আঁটসাট পোশাকে তার নিজের শরীর স্পষ্ট দেখছিলেন বাসযাত্রীরা। আর ভিডিওর কল্যাণে এখন দেখছেন দেশবাসী।
টি-শার্ট পরা ওই ছাত্রীকে পর্দা বিষয়ে সবক দিতে উগ্র আচরণ করেন হিজাবী নারী। কিন্তু ইসলামি শরীয়তের নির্দেশ অমান্য করে তিনি নিজের চেহারা দেখিয়েছেন মাস্ক খুলে সবার সামনে, কণ্ঠস্বর শুনিয়েছেন পরপুরুষকে- এমন মন্তব্যও উঠে এসেছে।
এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে অনুসন্ধান চালান অপরাধকণ্ঠের প্রতিবেদক। অনুসন্ধানে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা যায়, ইলু ওরফে শেফালি ওরফে ন্যান্সি নামের গোলাপী হিজাব পরা এই নারী মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে দেহব্যবসা করেন। তিনি একজন খদ্দের রফিককে (ছদ্মনাম) নিয়ে মগবাজারের হোটেলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাসে বসে সেই খদ্দের বারবার পেছনের দিকে ঘুরে টি-শার্ট পরা ওই ছাত্রীর দিকে তাকাচ্ছিলেন। যা বাসের অপর যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তারা বিষয়টি লক্ষ্য করে বিরক্ত হন।
সেই হিজাবী নারী লোকজনের উৎসুক দৃষ্টি এড়াতে কয়েকবার নিষেধ করার পরও রফিক ঐ ছাত্রীর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে থাকেন। একপর্যায়ে ক্ষেপে যান গোলাপী হিজাবী নারী। তার যাবতীয় ক্ষোভ গিয়ে পড়ে ওই ছাত্রীর ওপর। নিজের আসন থেকে উঠে ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করতে শুরু করেন তিনি। যদিও পুরো ঘটনায় ওই ছাত্রী কোনো কথাই বলেননি। তাতে উত্তরোত্তর ক্ষোভ বাড়তে থাকে ইলু ওরফে শেফালি ওরফে ন্যান্সির।
ওই ছাত্রীকে শিক্ষা দিতে এক পর্যায়ে দুজনকে (ধারণা করা হচ্ছে দালাল) ফোনও করেন হিজাবী নারী। কিন্তু তাদের সাড়া মেলেনি। এদিকে বাসের যাত্রীরা ঘটনাটি ভিডিও করতে শুরু করলে অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে খদ্দের রফিকও সটকে পড়েন।
এদিকে সেই বাসের চালক আব্দুল করিম ও হেলপার মো. হৃদয় জানান, গোলাপী হিজাবী ওই নারীকে তারা 'ন্যান্সি আপু' নামে চেনেন। তার মতো অনেক দেহপসারিনীই খদ্দের সংগ্রহ করে বাসে উঠে হোটেলে নিয়ে যান। তবে বাসে অন্য নারী যাত্রীকে হেনস্থা করার মত ঘটনা এর আগে ঘটেনি।