সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

বিএনপির মদদপুষ্ট এলবার্ট পি কস্টার বিরুদ্ধে খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ


সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের পার্বত্য এলাকা জুড়ে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিষ্টান রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত চলছে’। 

পার্বত্য এলাকায় নতুন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি নতুন কোনো ঘটনা নয়। পাহাড় কেন্দ্রিক কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বিভিন্ন সময় এ জাতীয় দাবি তুলেছিল। বাংলাদেশের তুলনায় ভারত ও মায়ানমারে এ সংকট আরও বেশি প্রকট। তবে অন্যান্য সংগঠনগুলো তাদের দাবির অসারতা অনুভব করে নিজেদের গুটিয়ে নিলেও কেএনএফ নামের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী গত দুই বছর যাবত স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নামে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে। চাকমা-মারমা বিদ্বেষ থেকে গড়ে ওঠা এ সংগঠনটির নেপথ্যে কয়েকটি এনজিও ও মিশনারিসহ দেশি-বিদেশি শক্তির যোগসাজস রয়েছে। প্রমাণ ও বাস্তবতার আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে এ ষড়যন্ত্রের কথা জাতির কাছে প্রকাশ করেছেন। 

কেএনএফের পক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে বগুড়ার দুই বিএনপি নেতা নিজেদের খ্রিস্টান ধর্মীয় পরিচিতি ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিএনপি-জামাতের ইন্ধন রয়েছে বলে অনেকেই ধারণা পোষণ করতেন। এমন কি কেএনএফ প্রধান নাথান বমের সঙ্গে তারেক রহমানের একাধিক বৈঠক হয়েছে বলেও বিভিন্ন সংবাদ সূত্রে জানা যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাঁর শাসনামলে বাংলাদেশ সম্প্রীতির মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই খ্রিস্টান ধর্মের নাম ব্যবহার করে অপরাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন।

বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের স্বঘোষিত সভাপতি ও যুবদল নেতা এলবার্ট পি কস্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের মূল সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও ও মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ১৪ দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে স্বঘোষিত বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এলবার্ট পি কস্টার বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মনগড়া বলে প্রত্যাখান করা হয়েছে। 

তাঁরা আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের মদদপুষ্ট এলবাৰ্ট পি কস্টা বিগত সময়েও সমাজের নানা ধরনের বিভক্তি সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন। এখনও তিনি তা অব্যাহত রেখেছেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিল অধিবেশনে কোনও শাখায় সংগঠনের কাউন্সিলর হতে না পেরে তিনি (এলবাৰ্ট পি কস্টা) স্বঘোষিত খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেছিলেন। সমাজের কোনও কাজ তিনি করেন না, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলই তার একমাত্র লক্ষ্য।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত স্বাধীনতাযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, কে আমাদের পক্ষে কাজ করেছেন, তা আমাদের জানা আছে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায় দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, শহীদ হয়েছেন এবং পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। তারা এ দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাসী এই সম্প্রদায় দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক যেকোনও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অতীতে ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।