মিলন পাঠান
১. গত ১৭ জুলাই এই আসনে উপনির্বাচন হয়ে গেলো। ফলাফল সকলেই জানি।এখন প্রশ্ন উঠেছে ভোটার উপস্থিতির হার নিয়ে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড- ১৫,১৮,১৯ ও ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে বর্তমান ঢাকা-১৭ আসন। ৩,১৩,৯৯৮ জন ভোটারের মধ্যে ৮ জন প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৩৭,৪২০ জন, অর্থাৎ প্রায় ১১.৫১%।
২.
বর্তমান ঢাকা-১৭ আসনে ১৯৭৩ সালের পরে বহুদিন আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচিত হয় নি। ১৯৯৬ সালে এ কে এম রহমত উল্লাহ বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপরে ২০১৮ সালে আকবর হোসেন পাঠান নায়ক ফারুক নৌকা নিয়ে জিতেছিলেন। এর মাঝখানের নির্বাচনগুলোতে এই আসনে নৌকার এমপি ছিলো না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ছাড়া নৌকা প্রতীকও কেউ চোখে দেখেনি এখানে। ১৯৭৯ সালে বিএনপি, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি, ১৯৯১ সালে বিএনপি, ২০০১ সালে বিএনপি, ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টি, ২০১৪ সালে বিএনএফ দলের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০০১ সাল পর্যন্ত এই এলাকাটি ছিল সাবেক ঢাকা-৫ আসনের মধ্যে। গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর ও বাড্ডা থানা এবং উত্তরা, কাফরুল ও খিলগাঁও থানার একাংশ হিসেবে। নির্বাচনী সীমানা বদল হয়ে যাওয়ায় নতুন আসনটিতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়নি বললেই চলে।
৩.
ভোট প্রাপ্তির হিসেবটা একটু দেখে নেয়া যাক।
এই আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে এ কে এম রহমত উল্লাহ ২০০১ সালে পেয়েছিলেন ১,৬৬,৮৩২ ভোট, ১৯৯৬ সালে ১,৩২,৪৪৩ ভোট এবং ১৯৯১ সালে সাহারা খাতুন পেয়েছিলেন ৪৫,৮১১ ভোট, ১৯৮৬ সালে আবু সিদ্দিক মাস্টার ৩৩,৩৭২ ভোট, ১৯৭৯ সালে বেগম নূরজাহান মোরশেদ ১৪,৯৮৩ ভোট।
২০০১ সালে চারদলীয় জোটের প্রার্থী মেজর(অব) কামরুল ইসলাম ধানের শীষ নিয়ে পেয়েছিলেন ২,১১,৪৪০ ভোট, ১৯৯৬ সালে ১,০৯,৩৭০ ভোট এবং ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া পেয়েছিলেন ৭১,২৬৬ ভোট, ১৯৭৯ সালে ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত ৪৪,৪৭৭ ভোট। ১৯৯১ সালে পরে উপ-নির্বাচনে মেজর কামরুল ইসলাম এমপি হয়েছিলেন।
২০০১ সালে জাতীয় পার্টি ১১,৫৫৮ ভোট, ১৯৯৬ সালে ২৪,৫৫৭ ভোট এবং ১৯৯১ সালে ১০,৭২৫ ভোট, ১৯৮৬ সালে ৫০,৬৬২ ভোট।
২০০৮ ও ২০১৪ সালে মহাজোটের প্রার্থী থাকলেও নৌকা প্রতীক ছিলো না। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৪.
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম রহমত উল্লাহ সাহেব ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক এই নেতা ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ১২ জুনের নির্বাচনে নৌকা নিজে বিজয়ী হোন এবং আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে নবগঠিত আসনটি রহমত উল্লাহর আসনের বাইরে চলে যায়, সম্পূর্ণ নতুন একটি আসনে রূপ নেয়। অপরদিকে মহাজোটের বদৌলতে নৌকার প্রার্থী না থাকায় এলাকাটিতে নৌকা হয়ে উঠে অপরিচিত। ২০১৪ সালেও একই ঘটনা ঘটে। ১৯৭৫ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ৪৪ বছরের মধ্যে মাত্র ১০ বছর নৌকার এমপি ছিলো এখানে। ২০১৮ সালে আকবর হোসেন পাঠান ফারুক নৌকা নিয়ে নির্বাচিত হলেও তিনি প্রায় পুরো সময়টাই অসুস্থ ছিলেন। ফলে ১০ বছরের মধ্যে মাত্র ৫ বছরই আসলে দলের সক্রিয় সাংসদের দেখা পেয়েছে জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীরা। এরকম একটি আসনে নৌকার পক্ষে ভোট টানা এবং ভোটারদেরকে কেন্দ্রে হাজির করা খুবই কঠিন কাজ। পত্রিকার ভাষ্যমতে এলাকাটিতে সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামোও তেমন শক্তিশালী নয়। এটাও বোধকরি সংসদীয় প্রতিনিধি না থাকার কুফল।
৫.
একাদশ সংসদের বিভিন্ন আসনে উপ-নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি উপ-নির্বাচন হয়েছে ও হচ্ছে বর্তমান মেয়াদে। মৃত্যুজনিত কারণেই সংখ্যাটা অনেক, এরমধ্যে পদত্যাগজনিত কারণ যোগ হয়েছে রেকর্ডসংখ্যকে পরিণত হয়েছে। যাহোক, কিছু উপ-নির্বাচনের ফলাফল দেখে নেয়া যাক।
গত ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম- ৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ১৪.৫৫% ভোট পড়েছে। এই এক আসন, যেখানে সংসদের এক মেয়াদে দুজন সাংসদের মৃত্যুতে দু’বার উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ৬টি আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটার উপস্থিতির হার ছিল যথাক্রমে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ৪৬.২৯%, বগুড়া-৪ আসনে ছিল ২৩.৯২%, বগুড়া-৬ আসনে ছিল ২২.৩৪%, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে প্রায় ৩৪%, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ২৯.০৮%, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ১৬.১০%। সবগুলোতেই একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
গত ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি, বিকল্প ধারা এবং আরও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। এখানে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৩৮.২৩ শতাংশ।
২০২২ সালের ৫ নভেম্বর ফরিদপুর- ২ আসনে উপ-নির্বাচন হয়। এখানে ২৬.২৭ শতাংশ ভোট পড়ে। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী ছিল।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপ-নির্বাচনে ৩৬.৬৫%। এখানে জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ছিল।
২০২১ সালের ২ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোট পড়ে ২৬.৪৯ শতাংশ। এখানে জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীও ছিল।
২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে ৩৪.৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিল।
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিলো ১৪.১৮%। এখানে বিএনপি সহ আরও কয়েকটি দলের প্রার্থী ছিলেন। একই দিনে সিরাজগঞ্জ-১ আসনেও উপ-নির্বাচন ছিল। সেখানে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৫১.৬৩%। রাজধানী ও মফস্বলের ভোটার উপস্থিতির পার্থক্যটা এখানে স্পষ্ট।
২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকা-৫ এবং নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঢাকা-৫ আসনে ১০.৪৩% ভোটার উপস্থিত হয়েছিলেন। এই আসনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, এনপিপি, কংগ্রেস ইত্যাদি দলের প্রার্থী ছিলো। তবে একই দিনে অনুষ্ঠিত নওগাঁ-৬ আসনে ভোটের হার ছিল ৩৬.৪৯%। এখানেও বিএনপি, এনপিপি দলের প্রার্থী ছিলো।
২০২০ সালের ১৪ জুলাইতে বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনে উপ-নির্বাচন হয়। বগুড়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সহ আরও তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল। এখানে ৪৫.৫৭% ভোট পড়েছিল। যশোরেও নৌকা, ধানের শীষ এবং লাঙ্গলের প্রার্থী ছিল। যশোরে ৬৩.৫৭% ভোট পড়েছে।
২০২০ সালে ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে ৫.২৮% ভোটার কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। এই নির্বাচনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, মুসলিম লীগ, কংগ্রেস, পিডিবি ইত্যাদি পার্টির প্রার্থী ছিলো। এরপরেও ভোটার উপস্থিতি ছিল সর্বনিম্ন। করোনা মহামারীর শুরুতেই এই নির্বাচন হওয়া একটা কারণ হতে পারে। একইদিন গাইবান্ধা-৩ এবং বাগেরহাট-৪ আসনে আরও দুটি উপ-নির্বাচন হয়। গাইবান্ধাতে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিল। এতে ৫৯.৪০% ভোট কাস্ট হয়েছিল। বাগেরহাট-৪ আসনে ছিল প্রায় ৬৯ শতাংশ। এখানেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিল। সবকিছুর পরেও রাজধানী ও মফস্বলের ভোটারের মানসিক ব্যবধানটা লক্ষ্যণীয়।
৬.
শুধু ঢাকা শহরের উপ-নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি দেখে নেয়া যাক।
ঢাকা-১০ আসনে উপ-নির্বাচনে ৫.২৮%, ঢাকা-৫ আসনে ১০.৪৩%, ঢাকা-১৮ আসনে উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিলো ১৪.১৮%। আর সর্বশেষ গত ১৭ জুলাইয়ের উপ-নির্বাচনে প্রায় ১১.৫১%। চারটির মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনে বরং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করেছেন। এক্ষেত্রে ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী এবং কদমতলী এলাকার ভোটারদের চেয়ে গুলশান ও ক্যান্টনেমেন্ট এলাকার ভোটাররা বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।
যারা বলেন, ১১.৫১% ভোটার উপস্থিত হওয়ায় গণতন্ত্রের ইজ্জত নাই হয়ে গেছে, তারা আমাদের ভোট প্রদানের ইতিহাস সম্পর্কে সত্য বলেন না। এমনকি তারা নিকট অতীতের কথাও ভুলে বসে আছেন। নইলে ঢাকা-১৭ আসনের সাম্প্রতিক উপ-নির্বাচন নিয়ে এতটা শোরগোল করতেন না।
ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী একজন ব্যবসায়ী এবং করোনা মহামারীর ভয়াবহ সময়ে হওয়ার জন্যও ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে মানলাম। কিন্তু ঢাকা-৫ এবং ঢাকা-১৮ আসনের প্রার্থীরা সিজনড পলিটিশিয়ান এবং করোনার তীব্রতাও তখন কমে এসেছিল; তাহলে সেখানে কম হয়েছিল কেন? কিছু মানুষের কথাবার্তায় মনে হয় ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ আলী আরাফাত না হয়ে তাঁকে(সুশীল সমালোচক) কিংবা অনেক ত্যাগী একজন রাজনীতিককে মনোনয়ন দিলেই ব্যাপকহারে ভোটার হাজির হতেন কেন্দ্রে। তাঁদের কথার উত্তরে শুধু এটুকুই বলা যায় ‘ভুল সবই ভুল’।
যেকোন নির্বাচনে গ্রামের চেয়ে শহরে এবং মফস্বল শহরের চেয়ে রাজধানীতে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটা বুঝতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হওয়া লাগেনা। নাগরিক ব্যস্ততাই এর প্রধান কারণ। স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের চেয়ে সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিও কম হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে একাধিক স্তরের বিভিন্ন পদে প্রার্থী থাকায় ভোটারের সঙ্গে প্রার্থীদের সরাসরি সংযোগ ঘটে অনেক বেশি, ভোটারও কেন্দ্রে যায় বেশি। অপরদিকে সংসদ নির্বাচনে কেবল একটি পদেই একাধিক প্রার্থী থাকায় প্রার্থীর সঙ্গে ভোটারের সরাসরি সংযোগ ঘটার সুযোগ কম। এজন্য ভোটও কম কাস্টিং হয়।
বিএনপির নেতৃত্বে বিভিন্ন দলের নির্বাচন বর্জন, মাত্র ৫ মাসের জন্য নির্বাচন, নৌকাকে হারানোর মতো প্রার্থী নেই, ফলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে নিশ্চিত জয়ের একটা ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হওয়া; এসবের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। তাছাড়া ঢাকা শহরের অন্যান্য উপ-নির্বাচনগুলোতেও মাত্র ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে, তাই ঢাকা-১৭ আসনকে আলাদাভাবে ব্যবচ্ছেদ করা বোকামী।
৭.
নির্বাচনের আগেই এক সাক্ষাৎকারে আমাদের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ভাই বলেছিলেন, নৌকার ভোট আছে, কিন্তু ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আনাই আসল চ্যালেঞ্জ। এটাই সত্যি হয়েছে। আরাফাত ভাইয়ের পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মধ্যে জনগণের কাছে যাবার, ভোটারদের কানেক্ট করার একটা সহজাত আকাঙ্ক্ষা লক্ষ্যণীয়। সুশীল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে এটা বিরল। এই বিরল গুণের বদৌলতেই ভোটার ও দলীয় কর্মীদের মধ্যে সেতুবন্ধনের অদম্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তিনি। উল্লিখিত ডাটা অনুযায়ী সফলতার কৃতিত্ব না দিলেও ব্যর্থতার দায়ভার চাপানো অন্যায় হবে। বরং আরাফাত ভাইয়ের ‘প্রো-পিপল’ চরিত্র লালন করার জন্য, ধারণ করার জন্য সাধুবাদ জানাই। দল ও নির্বাচনের রাজনীতিতে এসব খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আরেকটা জরুরি কথা। সরকার যদি ভোট চুরি করতো তাহলে কি ভোটার উপস্থিতির হার বাড়ানোর সুযোগ ছিল না? থাকলে বাড়ালেই পারতেন। তাহলে তো আর এসব বেহুদা বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। আমার মনে হয়, সরকারের মূল লক্ষ্য নির্বাচনকে প্রশ্নহীন করা। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ও সরকার শতভাগ সফল।
ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের একার নয়। প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থিত দল এবং ভোটার; এই চারপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই ভোটারগণ কেন্দ্রমুখী হয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমার প্রশ্নটা আরেকটু এগিয়ে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোতে মহানগরীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার মহানগর, থানা, ওয়ার্ড, মহল্লা ও ইউনিট শাখার কমিটিরগুলোর সদস্যবৃন্দ এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবমহিলা লীগ, কৃষক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ ইত্যাদি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শাখা কমিটিগুলোর সদস্যবৃন্দ এবং সকলের পরিবারের সদস্যরাও ভোটকেন্দ্রে হাজির হলে উপস্থিতির হার কত হতো ভাবা যায়? নিশ্চয়ই ভাবা যায়, গণনা করলেই সংখ্যাটা বের করা সম্ভব। আওয়ামী লীগের এই বিষয়টা ভেবে দেখা জরুরি। এক্ষেত্রে পুরনো একটা প্রশ্ন আবারও সামনে নিয়ে আসাটা প্রয়োজনীয় মনে করছি। মহানগর ও পৌরসভার বিভিন্ন শাখা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে স্থানীয় ভোটারদের প্রাধান্য দেয়া উচিত।